নববর্ষের আগে দোকান ভাঙার ভয়, চিন্তায় ঘাটালের ব্যবসায়ীরা

নববর্ষের আগেই দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন ঘাটাল শহরের ব্যবসায়ীরা। শিলাবতী নদীর ধারে সার্কিট বাঁধ ও দেওয়াল তৈরির পরিকল্পনায় শহরের পশ্চিম পাড়ের একাংশের দোকান ও ঘরবাড়ি ভাঙার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আর তার জেরেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে শতাব্দীপ্রাচীন এই ব্যবসা কেন্দ্রে।

চলছে চৈত্র সেল। নববর্ষের আগে সাধারণত এই সময়টা ঘাটালের বাজার গমগম করে ওঠে। একরাশ ব্যস্ততা, বিক্রি আর উৎসবের আমেজে কাটে ব্যবসায়ীদের দিন। কিন্তু এ বছর সেই চেনা ছবি যেন কেমন মলিন। কারণ মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী নদীর ধার ঘেঁষা বহু দোকান ও বসতবাড়ি বুলডোজারের কবলে পড়তে পারে।

দু’দিন আগেই দোকান ও জমির তালিকা হাতে পেয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। শহরের কৃষ্ণনগর, আলামগঞ্জ, নিউমার্কেট, ভিমতলা, পোস্তবাজার, কালীবাজার, কুঠিবাজার, কুমোরপাড়া থেকে শ্রীরামপুর পর্যন্ত বহু এলাকার ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন ঘোর অনিশ্চয়তা। তালিকায় কোথাও ৬০ ফুট, কোথাও ৭০ ফুট জায়গা অধিগ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

ঘাটালের ব্যবসায়ী তাপস দালাল বললেন, “এই সময়টায় আমাদের ব্যবসা সবচেয়ে ভালো হয়। কিন্তু এখন মনে শান্তি নেই। বুঝতেই পারছি না, আগামী দিনে আমাদের দোকান থাকবে কিনা।” ঘাটাল বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির কর্তা বরুণ দাসের কথায়, “শুধু ঘাটাল নয়, গোটা পশ্চিম মেদিনীপুরে এমন সংগঠিত পাইকারি বাজার নেই। অথচ মাস্টার প্ল্যানের খবরে ব্যবসায়ীদের মনোবল ভেঙে পড়েছে।”

শহরের আর এক ব্যবসায়ী কৌশিক দত্ত বললেন, “মাস্টার প্ল্যান হোক, আমরাও চাই। কিন্তু বিকল্প ব্যবসার জায়গার ব্যবস্থা না করে যদি দোকান তুলে দেওয়া হয়, তাহলে হাজার হাজার ব্যবসায়ী কীভাবে চলবে?”

বংশপরম্পরায় গড়ে ওঠা ব্যবসা আজ অনিশ্চয়তার মুখে। প্রশাসন কী ভাবছে, বিকল্প কী হতে পারে—সেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন ঘাটালের হাজার হাজার ব্যবসায়ী।