জলেই বিষ? মেদিনীপুরে একের পর এক জন্ডিসের কেস, আতঙ্ক বাড়ছে

সরাসরি কলের জল খাওয়া এখন দুঃসাহসের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে মেদিনীপুর শহরের কিছু এলাকায়। বিশেষ করে সুকান্তপল্লি অঞ্চলে হু হু করে বাড়ছে জন্ডিস আক্রান্তের সংখ্যা। স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, পানীয় জলের মাধ্যমেই ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। ইতিমধ্যেই ২৪ জন হেপাটাইটিস-এ আক্রান্ত হয়েছেন শুধু সুকান্তপল্লি এলাকাতেই। এর বাইরে আরও অনেকে জন্ডিসের উপসর্গ নিয়ে ভুগছেন।

পুরসভা এবং জেলা প্রশাসন মিলে এখন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করেছে। সমস্যা যে সমস্ত পানির কল থেকে ছড়াচ্ছে, সেগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সব ঘর থেকে পানীয় জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে।

২২ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়াও আশপাশের ২০ এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ডেও সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মোট প্রায় ৫০ জনের শরীরে এখন পর্যন্ত জন্ডিসের উপসর্গ পাওয়া গিয়েছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে গত বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠকে বসেন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকরা এবং পুরসভা কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছেন, পুরো মেদিনীপুর শহর জুড়েই নজরদারি চালানো হবে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী জানিয়েছেন, “আমরা প্রতিটি বাড়ি থেকে পানীয় জলের নমুনা নিচ্ছি, এবং পাশাপাশি কারও শরীরে উপসর্গ আছে কিনা, সেটাও খতিয়ে দেখছি।”

বৃহস্পতিবারই সুকান্তপল্লিতে পৌঁছেছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং মহকুমা শাসক মধুমিতা মুখোপাধ্যায়। তাঁদের দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী। অভিযোগ, বহুদিন ধরেই নোংরা জল পান করছেন তাঁরা, কিন্তু নজরদারি ছিল না বললেই চলে। এখন প্রশ্ন একটাই — কবে মিলবে সুরাহা? পানীয় জল নিয়ে মেদিনীপুরের এই দুশ্চিন্তা কতটা বড় আকার নেবে, সেটাই এখন দেখার।