ওয়াকফ আইনকে ঘিরে রাজ্যের একাধিক জেলায় যেভাবে অশান্তি ছড়িয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। এই প্রেক্ষিতেই সোমবার মেদিনীপুর শহরে একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন খড়্গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় ওরফে হিরণ। সেখানেই রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীকে একযোগে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি।
হিরণ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের মা-বোনেরা আজ কাঁদছেন। তাঁদের চোখের জল দেখে মনে হচ্ছে আমাদের রাজ্যপাল খুব উল্লসিত হচ্ছেন। তাই তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়ে অ-আ-ক-খ শিখছেন। যিনি রাজ্যের সাংবিধানিক রক্ষাকর্তা, তিনিই যদি এমন আচরণ করেন, তাহলে রাজ্যে শান্তি ফিরবে কীভাবে? তাই দরকার হলে রাজ্যপালকে বদলানো হোক, অথবা তিনি যেন অবিলম্বে ঘুম থেকে জেগে ওঠেন।”
এরপরই হিরণ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন, “এই মুখ্যমন্ত্রীকে আমি বলব জিহাদী মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মদতেই সারা রাজ্যে—শিলিগুড়ি থেকে মালদা, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, হুগলি, চব্বিশ পরগনা—যেখানে-সেখানে সন্ত্রাস চলছে। আর তাঁর পুলিশ সমস্তকিছু নীরব থেকে দেখছে। সাধারণ মানুষ আজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাঁরা গত চার-পাঁচ বছর ধরেই এই সরকারের হাত থেকে মুক্তি চেয়ে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু রাজ্যপালই এখন মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে অ-আ-ক-খ শেখার ব্যস্ততায় মগ্ন।”
এই মন্তব্যের পরই হিরণ আরও একটি বিতর্কিত প্রসঙ্গ টেনে আনেন—দিলীপ ঘোষের খড়্গপুর বাংলো বিতর্ক। যদিও তিনি সরাসরি কিছু বলেননি, কিন্তু সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের একটি উক্তি তুলে ধরেন, “তুমি অধম হইলে আমি উত্তম হইব না কেন?” এরপর মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর পরিবারকে নিশানা করে বলেন, “কালীঘাটের খালের ধারের সমস্ত জমি তো মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর পরিবারের লোকেরা দখল করে নিয়েছেন। আগে সেই প্রশ্নের উত্তর দিন। তারপর আমি দিলীপ ঘোষের বাংলো বিতর্ক নিয়ে কিছু বলব। তবে এটুকু বলব, তুমি অধম হইলে আমি উত্তম হইব না কেন।”
হিরণের এই মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। ওয়াকফ আইনকে ঘিরে রাজ্যে যে অশান্তির আগুন জ্বলছে, তার মাঝেই তাঁর এই বিস্ফোরক মন্তব্য রাজনীতির পারদ আরও চড়িয়ে দিল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।