স্ত্রীর সঙ্গে এক স্কুল শিক্ষকের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক! সেই সম্পর্কেই ভেঙে যায় দাম্পত্য জীবন। আর সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতে একের পর এক স্কুলে চুরি করে গেল দাসপুরের যুবক দিলীপ দাস। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১০০-রও বেশি স্কুলে চুরির অভিযোগ রয়েছে ধৃতের বিরুদ্ধে। শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া, উত্তরবঙ্গ এমনকি ওড়িশার বিভিন্ন স্কুলেও হানা দিয়েছে সে।
পেশায় মিস্ত্রি দিলীপের দাবি, শিক্ষকের কারণে তার দাম্পত্য ভেঙেছে। সেই শিক্ষকের প্রতিশোধ নিতে ‘শিক্ষকতার পেশা’কে টার্গেট করেছিল সে। তাই স্কুলগুলিকেই বেছে নেয় চুরির জন্য। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, চুরির সময় সে একাই কাজ করত। কোনও সঙ্গী ছিল না। সাধারণত শনিবার রাতে স্কুলে ঢুকত সে, কারণ রবিবার ছুটি থাকায় সময় বেশি পাওয়া যেত। চুরির আগে সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে পুকুরে ছুড়ে দিত, যাতে প্রমাণ না থাকে।
গত ২১ মার্চ ও ৩০ মার্চ লালগড়ের দুটি স্কুলে চুরির ঘটনায় তদন্তে নামে পুলিশ। সেখান থেকেই সূত্র ধরে দিলীপকে চিহ্নিত করা হয়। বুধবার গভীর রাতে লালগড়ের কাঁটাপাহাড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশ থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে বিচারক পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। তদন্তে উঠে এসেছে আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যেদিন রাজ্যের ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়, সেদিন আনন্দে মদ খেয়ে সারা রাত নেচেছিল দিলীপ।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের পরিকল্পনা ছিল আরও কিছু স্কুলে চুরির। তবে সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে সক্ষম হয়েছে তারা। তদন্ত এখনও চলছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। একজনের ব্যক্তিগত প্রতিশোধ কীভাবে শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চুরির কারণ হয়ে উঠতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।