পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার পানিপারুল ও দেবীদাসপুর এলাকায় কৃষিজমিতে অবৈধভাবে তৈরি হচ্ছে ভ্যানামি চিংড়ির ভেড়ি। সেই ভেড়ির নোনাজল চুঁইয়ে ঢুকে পড়ছে দোফসলি জমিতে। ফলে ধান, আনাজ এবং লঙ্কার মতো বাগিচা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। জমি হয়ে উঠছে চাষের অযোগ্য। প্রশাসনের নীরবতায় ক্ষুব্ধ কৃষকেরা আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই দুই মৌজায় প্রায় ৫০০ একর চাষযোগ্য জমি রয়েছে। ধান ও আনাজ চাষের পাশাপাশি, ব্যাপক হারে লঙ্কার চাষ হয়। কিন্তু গত পাঁচ বছরে ওই এলাকায় বেআইনি ভাবে তৈরি হয়েছে অন্তত ১২টি ভেড়ি। প্রতিটি ভেড়ির আয়তন প্রায় ১০ একর করে। ব্যবসায়ীরা মোটা টাকার লোভ দেখিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে জমি লিজে নিচ্ছেন। পাশের ওড়িশা কোস্ট ক্যানাল থেকে পাম্প করে ভেড়িতে আনা হচ্ছে নোনাজল, যা জমির পাশ দিয়ে চুঁইয়ে ঢুকে নষ্ট করছে ফসল।
এই পরিস্থিতিতে কৃষকেরা গত ৩ মার্চ ব্লক, মহকুমা ও জেলা প্রশাসনের কাছে গণস্বাক্ষরসহ লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হৃষিকেশ জানা ও রাধারমণ দাস বলেন, ‘‘জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে। আমরা কৃষি ও ভূমি দফতরে জানিয়েও সুরাহা পাইনি। তাই এবার আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
কৃষক ও খেতমজুর সংগঠনের সভাপতি প্রকাশ রায় চৌধুরী জানান, ‘‘প্রশাসন যদি এবারও চুপ করে থাকে, কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে হবে।’’ এই বিষয়ে এগরার মহকুমাশাসক মনজিৎকুমার যাদব বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কৃষি ও ভূমি দফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।’’
চাষের জমি রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ না হলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হবে বলেই আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রশাসনের সক্রিয় হস্তক্ষেপই এখন কৃষকদের একমাত্র ভরসা।