নন্দীগ্রামে গোরু পাচার রুখতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হলেন পুলিশকর্মীরা। মৃত্যু হল পুলিশের গাড়িচালক সহদেব প্রধানের। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
বুধবার রাতে নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়া ফাঁড়ির পুলিশকর্মীরা নন্দীগ্রাম-চন্ডীপুর রাজ্য সড়কে টহল দিচ্ছিলেন। সেই সময় একটি গাড়িকে দেখে তাঁদের সন্দেহ হয় যে তাতে গোরু পাচার হচ্ছে। পুলিশ গাড়িটিকে থামানোর চেষ্টা করলে বিপদ আঁচ করে দুষ্কৃতীরা পুলিশের গাড়িতে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। সেই ধাক্কায় গুরুতর আহত হন গাড়িচালক সহদেব প্রধান ও দুই পুলিশকর্মী। পরে তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে সহদেবকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। আহত দুই পুলিশকর্মী এখন নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি।
সহদেব প্রধানের বাড়ি নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়ায়। তিনি পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। আত্মীয় খোকন বেরা জানিয়েছেন, সকালে খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে আসেন, কিন্তু এসে দেখেন সব শেষ।
ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক চাপা উত্তেজনা শুরু হয়েছে। বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব অভিযোগ করেছে, নন্দীগ্রামে দীর্ঘদিন ধরেই গোরু পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য চলছে। পুলিশ প্রশাসন নিষ্ক্রিয় বলেই এমন ঘটনা ঘটছে। ঘটনার প্রতিবাদে রেয়াপাড়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে বৃহস্পতিবার সকালে বিজেপি-সমর্থিতরা বিক্ষোভ দেখায়।
তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। কিন্তু তাতে রাজনীতি করা উচিত নয়। পাশাপাশি, তৃণমূল নেতৃত্বও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে প্রশাসন।